শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ॥
নাম মোঃ আসাদুজ্জামান রায়হান। তার পিতা মোঃ আনোয়ার হোসেন পেশায় একজন ট্রাকচালক। রায়হান বরিশাল ‘ইউজিভি’ এর শিক্ষার্থী।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় বিপরীত দিক থেকে ছোড়া গুলিতে শরীরের বিভিন্ন স্থানসহ ডান চোখে গুলিবৃদ্ধ হয় রায়হান।
আহত অবস্থায় তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করলেও উন্নত চিকিসার জন্য ঢাকা প্রেরণ করা হয়। ঢাকা ধানমন্ডিতে বাংলাদেশ চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও রায়হানের দৃষ্টিশক্তি ধরে রাখতে বিদেশে নিয়ে চোখের চিকিৎসা করানোর কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
রায়হান বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের শোলনা গ্রামের বাসিন্দা। রায়হানের স্ত্রী অপ্রিম আক্তার বাবনী বলেন, তার স্বামী ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজের (ইউজিভি) শিক্ষার্থী।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ডান চোখে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। তার ডান চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে। কিন্ত ধানমন্ডি বাংলাদেশ চক্ষু হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে রায়হানের চোখের দৃষ্টি ধরে রাখতে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা সেবা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
এতে সাড়ে ৭ লাখ টাকার উপরে ব্যয় হবে। কিন্তু আমাদের পরিবারের পক্ষে এত টাকার ব্যয় করা সম্ভব না। সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী বর্তমানের সকল চিকিৎসার ব্যয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহন করছে।”
বাবনী আরো জানান, আন্দোলনের শুরু থেকে রায়হান বরিশালের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছিলেন। এখন চোখের সামনে ছেলের এমন অবস্থা দেখে নিজেকে ধরে রাখতে পারছেন না তার পিতা। তাই ছেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন রায়হানের বাবা।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আনোয়ার হোসেন বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের কাছে ফরিয়াদ, তিনি যেন আমার ছেলের দৃষ্টিশক্তি ধরে রাখার জন্য উন্নত চিকিৎসার সু-ব্যবস্থা করেন। রায়হানকে সুস্থ করে আমাদের পরিবারের মাঝে ফিরিয়ে দেয়া আশা করেন। কেননা তার সংসারের হাল ধরার মতো একমাত্র রায়হানই রয়েছে।’ বর্তমানে আমি পাঁচ সদস্যের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি
। তারমধ্যে এমন অবস্থা। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, ‘রায়হানকে নিয়ে তার মা-বাবার অনেক স্বপ্ন ছিল। ছেলের পড়াশোনার ব্যয় মিটিয়ে সংসার চালাতে তার বাবা হিমশিম খাচ্ছেন। এই অবস্থায় ছেলেকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানো তার পরিবারের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।